ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের উজান থেকে নেমে আসা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার হাওড়া নদী থেকে একাধিক ড্রেজার দিয়ে বালু ও মাটি লুটের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা কৃষক দল ও শ্রমিক দলের দুই নেতার বিরুদ্ধে। বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসীর পক্ষে বিএনপিরই আরেক নেতা নিয়মবহির্ভূতভাবে বালু ও মাটি উত্তোলন বন্ধের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সোমবার দুপুরে আখাউড়া পৌর শহরের বাঁধন কমিউনিটি সেন্টারে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আখাউড়া উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের হাওড়া নদী থেকে বালু ও মাটি উত্তোলনে অনিয়ম, নদীর দুই পারের কৃষিজমি ও ঘরবাড়ি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা এবং জনদুর্ভোগের অভিযোগে ভুক্তভোগী এলাকাবাসী ইতঃপূর্বেও একাধিকবার মানববন্ধন কর্মসূচি ও সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। তাদের অভিযোগ, প্রভাবশালী ওই বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে প্রশাসনও রহস্যজনক কারণে নীরব ভূমিকা পালন করছে।
সংবাদ সম্মেলনে মোগড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান নান্নু মিয়া বলেন, মোগড়া ইউনিয়নের জনবসতিপূর্ণ এলাকার বুক চিরে প্রবাহিত হাওড়া নদী থেকে বালু উত্তোলনের নামে মাটি ও বালু লুট করা হচ্ছে। খাস আদায়ের চিঠি ও দখলনামায় উল্লিখিত ‘বালু চর’, মালিকানা জায়গা, যা কোনোভাবেই ড্রেজার দিয়ে বালু ও মাটি উত্তোলনের উপযুক্ত নয়। কিন্তু আখাউড়া উপজেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব বাহাদুর হোসেন তিতাস, উপজেলা শ্রমিক দলের সদস্য সচিব ওমর ফারুক মিয়াসহ একটি প্রভাবশালী চক্র একাধিক ড্রেজার ব্যবহার করে মালিকানাধীন জমির মাটিসহ হাওড়া নদীর বালু ও মাটি লুট করে নিয়ে যাচ্ছে।
নান্নু মিয়া বলেন, প্রতিবছর ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের উজানের ঢলে হাওড়া নদীর বাঁধ ভেঙে নদীপারের মানুষের ব্যাপক ক্ষতি হয়। আশঙ্কার বিষয়-এখন আবার ড্রেজার দিয়ে অবাধে বালু ও মাটি উত্তোলন শুরু হলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে।
আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অতীশ দর্শী চাকমা এবং আখাউড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কফিল উদ্দিন মাহমুদ সম্প্রতি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় এলাকাবাসী তাদের কাছে জানতে চান এ বিষয়ে কোনো সরকারি অনুমোদন আছে কি না? ইউএনও জানান, বিষয়টি তার জানা নেই, তিনি এলাকাবাসীকে ধৈর্যধারণের আহ্বান জানান। অভিযোগের বিষয়ে আখাউড়া উপজেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব ও মেসার্স সিনান এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী বাহাদুর হোসেন তিতাস এবং উপজেলা শ্রমিক দলের সদস্য সচিব ওমর ফারুক গণমাধ্যম’ কে বলেন, আমরা কোনো অনিয়ম করিনি। সরকারি সব নিয়ম মেনেই বালু উত্তোলন করছি। সংবাদ সম্মেলনে মোগড়া ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার তাজুল ইসলাম ও সাবেক মেম্বার শহীদ মিয়া বক্তব্য দেন।
