সায়মা ওয়াজেদ পুতুল ও সজীব ওয়াজেদ জয়
জনকল্যাণের উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) বিরুদ্ধে কর মওকুফ, অনুদান গ্রহণ এবং অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সিআরআইয়ের চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এবং তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ মোট আটজনের বিরুদ্ধে এ মামলা করা হবে।
বুধবার (৫ নভেম্বর) দুদকের উপ-পরিচালক আকতারুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলায় নাম আসা অন্য আসামিরা হলেন- সিআরআইয়ের ট্রাস্টি রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক, সাবেক বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রী নসরুল হামিদ (বিপু), সিআরআইয়ের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর শাব্বির বিন শামস, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য রওশন আরা আক্তার, সাবেক চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া এবং সাবেক অর্থমন্ত্রী আ.হ.ম. মোস্তফা কামাল।
দুদকের প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অভিযুক্তরা পরস্পর যোগসাজশে আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর বিধি লঙ্ঘন করে সিআরআই-কে কর মওকুফের সুবিধা প্রদান করেছেন। যদিও এটি সমাজসেবা অধিদপ্তরে নিবন্ধিত নয়। ফলে প্রতিষ্ঠানটি অবৈধভাবে কর সুবিধা গ্রহণ করেছে এবং সরকারি রাজস্বের ক্ষতি হয়েছে।দুদকের অনুসন্ধানে জানা যায়, সংশ্লিষ্টরা তদবির ও চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে অনুদান সংগ্রহ করেছেন। সিআরআইয়ের হিসাব অনুযায়ী, ২৩টি কোম্পানি থেকে মোট ৪৫ কোটি ৩৫ লাখ ৯৫ হাজার টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে। ২০১৩-১৪ থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছর পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি অবৈধভাবে ১০০ কোটি ৩১ লাখ ৪০ হাজার ৪৮৬ টাকা আয় করেছে।অগ্রহণযোগ্য ব্যয় বাদ দিলে সিআরআইয়ের হিসাব অনুসারে ৭০ কোটি ৮০ লাখ ৪২ হাজার ৩৯০ টাকা থাকা উচিত ছিল, কিন্তু প্রকৃত হিসাব পাওয়া গেছে মাত্র ৫৫ কোটি ১১ লাখ ৮২ হাজার ৮৯৬ টাকার। অর্থাৎ প্রায় ১৫ কোটি ৬৮ লাখ ৬০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে দুদক।
এছাড়া, সিআরআইয়ের নামে পরিচালিত ২৫টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ৪৩৯ কোটি টাকার বেশি সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে জমা হয়েছে ২৪৭ কোটি ৮৫ লাখ টাকার বেশি এবং ১৯১ কোটি ২১ লাখ টাকার বেশি উত্তোলন করা হয়েছে। একইসঙ্গে ৩৬ লাখ ৫২ হাজার ৭৪২ টাকা আয়কর না দেওয়ার মাধ্যমে সরকারকে ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে।
এ ঘটনার সঙ্গে মানিলন্ডারিংও সংশ্লিষ্ট ছিল বলে উল্লেখ করেছে দুদক। যার ফলে দণ্ডবিধি, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের আওতায় মামলা দায়েরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
