পারমাণবিক শক্তিচালিত বুরেভেস্টনিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার তিনদিন পরে মস্কো বুধবার বলেছে, তারা পানির নিচে নতুন পারমাণবিক ড্রোনের একটি পরীক্ষা চালিয়েছে। পানির তলায় সক্রিয় এই ড্রোনের নাম রাখা হয়েছে পোসাইডন। ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতিতে মস্কোর অনীহা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা স্থগিত হওয়ার মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয় পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালালো রাশিয়া। প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন এটিকে একটি নতুন অস্ত্র হিসেবে বর্ণনা করে বলেছেন, কারোর শক্তি নেই এই ড্রোনকে রুখে দেয়ার।
ড্রোনটিকে ইতিমধ্যেই ‘ফড়ড়সংফধু সধপযরহব’ বা ‘কেয়ামতের হাতিয়ার’ হিসেবে ডাকা হচ্ছে। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধে আহত সৈন্যদের সঙ্গে দেখা করার সময় মস্কোর একটি হাসপাতালে ভাষণ দিতে গিয়ে পুতিন বলেন, প্রথমবারের মতো পারমাণবিক শক্তিসম্পন্ন পোসেইডন ড্রোনের পরীক্ষা করা হয়েছিল। গতি ও গভীরতায় এই ড্রোন অতুলনীয় বলেও বর্ণনা করেছেন পুতিন। রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট বলেছেন, পারমাণবিক চুল্লি যেটি পোসেইডনকে শক্তি দেয় তা সাবমেরিনের তুলনায় ১০০ গুণ ছোট এবং এর পারমাণবিক ওয়ারহেডের শক্তি দেশের সবচেয়ে উন্নত সারমাট আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি।ক্রেমলিনের মিডিয়া আউটলেটগুলো দাবি করে, পোসাইডন প্রতি ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটার বেগে যাওয়ার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। ন্যাটোতে ‘ক্যানিয়ন’ নামে পরিচিত এবং মস্কোর দ্বারা পূর্বে ‘স্ট্যাটাস-৬’ লেবেলযুক্ত, ড্রোনটি ২০ মিটার লম্বা, ১.৮ মিটার ব্যাস এবং ১০০ টন ওজনের। মস্কো দাবি করে, পারমাণবিক শক্তি এটিকে সীমাহীন পরিসীমা দেয়, ড্রোনের গতি এবং গভীরতা এটিকে শনাক্ত করা কঠিন করে তোলে।
পোসেইডনকে রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ ছয়টি নতুন অস্ত্রের মধ্যে একটি, ‘সুপার ওয়েপন’ বলে উল্লেখ করা হচ্ছে। রাশিয়ান মিডিয়া জানিয়েছে, পোসেইডনটি উপকূলরেখার কাছে বিস্ফোরিত হওয়ার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। যাতে এর জেরে জলোচ্ছ্বাস বা সুনামির সৃষ্টি না হয়। গত রোববারই পুতিন ঘোষণা করেছিলেন, রাশিয়া তার ‘অনন্য’ বুরেভেস্টনিক পারমাণবিক-প্রস্তুত ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে, যা দেশের জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে বর্ণনা করেছে ক্রেমলিন।
গত সপ্তাহে রাশিয়ার পারমাণবিক মহড়ার মধ্যে বুরেভেস্টনিক পরীক্ষা এবং তার মাত্র কয়েকদিন পরেই পোসেইডন পরীক্ষা ব্যাপকভাবে ওয়াশিংটনের প্রতি বার্তা হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। পুতিন ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন, মস্কো মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এবং চাপ সহ্য করবে না। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বুরেভেস্টনিক পরীক্ষার ঘোষণাকে ‘উপযুক্ত নয়’ বলে অভিহিত করেছেন। সেই সঙ্গে তিনি মস্কোকে মনে করিয়ে দিয়েছেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি পারমাণবিক সাবমেরিন তাদের তীরে ঠিক মোতায়েন রয়েছে। সূত্র: ইউরো নিউজ
