জামালপুরের মাদারগঞ্জের ইসলামাবাদ ওয়াসিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ দখল করে ভাড়ায় চলছে স্যানাটারী ব্যবসা।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের মাঠের দক্ষিণ ও পশ্চিম প্রান্তে টিনসেড ঘরে লাগানো একটি সাইনবোর্ড লেখা রয়েছে মেসার্স আলমগীর এন্টারপ্রাইজ। ঘরটির চারপাশ দিয়ে ছড়িয়ে রয়েছে স্যানেটারী মালামাল তৈরির বিভিন্ন রসদ। দেখলে মনে হয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি নিজের জায়গায় পরিচালিত হচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ভূমি দখল করে ব্যবসা করছে বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের কোন তোয়াক্কা না করে গায়ের জোরে বহুবছর যাবৎ স্কুল মাঠে স্যানেটারী ব্যবসা চালিয়ে আসছে আলমগীর কবির। এটা যেন,জোর যার মুল্লুক তার।
ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমানের আমল থেকে রেজুলেশনের মাধ্যমে ১৫’শ টাকা ভাড়ায় ব্যবসা চালিয়ে আসছিল। আলমগীর গুনারীতলা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সদস্য হওয়ার সুবাদে প্রভাব খাটিয়ে সভাপতির কাছ থেকে বাগিয়ে নেয় স্কুল মাঠের একাংশ।
আওয়ামী সরকার পতনের পর বিষয়টি স্থানীয় ব্যক্তিবর্গের নজরে আসলে টনক নড়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের।
এদিকে অভিযুক্ত মেসার্স আলমগীর এন্টারপ্রাইজ এর স্বত্বাধিকারী আলমগীর কবির বলেন, বিগত কমিটি আমাকে ৩ বছরের চুক্তিতে ভাড়া দিয়েছে। জায়গা ছাড়ার জন্য দুই বার নোটিশ দেয় স্কুল কর্তৃপক্ষ। আমি যদি আবার সময় বাড়িয়ে নিতে পারি তাহলে নেবো।
ওই বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী হাসান মুর্তুজা ও নবির হোসেন জানায়, স্কুল মাঠে আমরা খেলতে গিয়ে স্যানেটারী সামগ্রী রাখার কারণে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছি। এছাড়াও অনেক শিক্ষার্থী খেলার সময় আঘাত পেয়ে খেলাধুলা ছেড়েছে। আমরা এর সুষ্ঠু সমাধান চাই।
এ ব্যাপারে ইসলামাবাদ ওয়াছিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজাহারুল ইসলাম বলেন, বিগত ম্যানেজিং কমিটির রেজুলেশন মোতাবেক তাকে সম্পূর্ণ অস্থায়ী ভিত্তিতে ভাড়া দেওয়া হয়। মাসিক পনের’শ টাকার বিনিময়ে বিদ্যালয় তহবিল বৃদ্ধির জন্য।
ওই চুক্তিতে উল্লেখ রয়েছে, বিদ্যালয়ের প্রয়োজনে যে কোন সময় উক্ত জায়গায় ছেঁড়ে দিতে বাধ্য থাকিবে। তবে এই শর্ত মানতে নারাজ আলমগীর। সাম্প্রতিক
প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের কারণে গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ শিক্ষার্থী অভিভাবকবৃন্দ স্কুল মাঠ সম্পূর্ণ খালি করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।
এই প্রেক্ষিতে আমি তাকে নোটিশ প্রদান করি জায়গায় ছেঁড়ে দেওয়ার জন্য। প্রথমে ৩০ সেপ্টেম্বর/২৪ পরবর্তী ২য় ধাপে ২৩ অক্টোবর/২৫ ইং তারিখের মধ্যে আলমগীর কে জায়গা ছাড়ার সময় বেঁধে দেয় স্কুল কর্তৃপক্ষ ।
তদবিরের পরিপ্রেক্ষিতে আরো এক মাস সময় দেওয়া হয়। আলমগীর আবারো বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ কাছে গিয়ে সুপারিশ করে কিছুদিন সময় নেয় ।
এডহক কমিটির মাধ্যমে সর্বশেষ ৩য় বারের মতো নোটিশ দেই এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জায়গা ছেড়ে না দিলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ছানোয়ার হোসেন বলেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের খেলার মাঠ শিক্ষার্থীর জন্যই উন্মুক্ত অন্য কোন কাজে ব্যবহার করার সুযোগ নাই। যদি স্কুল কর্তৃপক্ষ এরকম কোন সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে সেটা অবশ্যই সঠিক হয়নি। এ ধরনের কোন অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
