রাজধানীর রামপুরা টেলিভিশন সেন্টারের সামনে রোববার দুপুরে প্রকাশ্যে বাস থেকে এক ব্যক্তিকে নামিয়ে ডাকাতি করে ১৮ থেকে ২০ জনের একটি সংঘবব্ধ চক্র। মো. সুমন মিয়া নামের ওই ভুক্তভোগী তার দুবাই প্রবাসী ভাইয়ের পাঠানো স্বর্ণালংকার নিয়ে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বাসে করে বাসায় ফিরছিলেন। কিন্তু তিনি রামপুরা টেলিভিশনের সামনে পৌছালে ডাকাতেরা তাকে ছিনতাইকারী বলে বাস থেকে নামিয়ে নিয়ে যায়। পরে অস্ত্রের মুখে তার কাছে থাকা সবকিছু ছিনিয়ে নেয় ডাকাতরা।
এ ঘটনায় লুণ্ঠিত স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকাসহ আটজনকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির হাতিরঝিল থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মনির হোসেন শিমুল, শাকিল ওরফে শাকিব, রাকিবুল হাসান, আরিফ, আহসানুল্লাহ মিরাজ, শাওন মোল্লা, মনির হোসেন ও সুমন মিয়া।
ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান গ্রেফতারের বিষয়টি গণমাধ্যম’ কে নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, রোববার রাত থেকে সোমবার ভোর পর্যন্ত টানা অভিযান চালিয়ে ডাকাত দলের আট সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য। ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় সংঘবদ্ধ হয়ে কৌশলে ডাকাতি করে আসছিল বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়।
হাতিরঝিল থানা সূত্রে জানা যায়, মামলার বাদী মো. সুমন মিয়া একজন বেসরকারি চাকরিজীবী। তার দুবাই প্রবাসী ভাই মো. শফিকুল ইসলাম বোনের বিয়ের জন্য দুবাই থেকে মো. ইমরান নামে এক ব্যক্তির মাধ্যমে প্রায় ৯৯.৯৯ গ্রাম স্বর্ণালংকার (মূল্য প্রায় ২০ লাখ টাকা) পাঠান। সুমন মিয়া রোববার দুপুরে বিমানবন্দর থেকে স্বর্ণালংকার গ্রহণ করে বাসে করে বাসার উদ্দেশে রওনা হন। পথে রামপুরা টিভি সেন্টারের দক্ষিণে পৌঁছালে অজ্ঞাতনামা ১৮-২০ জন লোক বাস থামিয়ে তাকে ছিনতাইকারী বলে মারধর করে এবং একটি অটোরিকশায় জোরপূর্বক তুলে হাতিরঝিল থানাধীন উলন এলাকার একটি নির্মাণাধীন ভবনে নিয়ে যায়।
সেখানে তাকে অস্ত্রের মুখে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে স্বর্ণালংকারসহ ট্র্যাভেল ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। পরে এক আসামি নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে সুমন মিয়ার ইসলামী ব্যাংকের এটিএম কার্ড ও পাসওয়ার্ড নিয়ে ১১ হাজার টাকা তুলে নেয়। রোববার বিকেল আনুমানিক ৫টার দিকে আসামিরা বাদীকে ঘটনাস্থলে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় বাদীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে ডিএমপির হাতিরঝিল থানায় একটি ডাকাতি মামলা রুজু করা হয়। মামলার প্রেক্ষিতে সোমবার ভোর আনুমানিক ৪ টা ৫০ মিনিটের দিকে হাতিরঝিল থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ঘটনায় জড়িত আটজনকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে লুণ্ঠিত ৯৯.৯৯ গ্রাম স্বর্ণালংকার (যার মধ্যে স্বর্ণের ২টি গলার হার ও ৯ টি আংটি) এবং নগদ ছয় হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
