আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ২৩৭টি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে বিএনপি। তবে বহুল আলোচিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ-বিজয়নগর একাংশ) আসনে কারও নাম ঘোষণা করা হয়নি।
এ আসনটি স্থগিত রাখা হয়েছে। বিএনপির দুর্গ বা ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এ আসনটি জোটের শরিকদের ছেড়ে দেওয়া হতে পারে বলে গুঞ্জন রয়েছে।
এ আসনটি আপাতত স্থগিত রাখার পরও মনোনয়নের আশায় দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে সভা-সমাবেশ ও ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা।
মনোনয়ন না পাওয়ায় এ আসনে তার অনুসারী ও এলাকার নেতাকর্মীরা কিছুটা হতাশ হলেও ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার প্রচারণা থেমে নেই। প্রায় প্রতিদিন তিনি নেতাকর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে দুটি উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল চষে বেড়াচ্ছেন।
বিএনপি ২৩৭টি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণার পর তালিকায় নাম না থাকলেও মাঠে কাজ করে যাচ্ছেন ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস এবং বিএনপির রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আশুগঞ্জ উপজেলার বেশ কয়েকটি পথসভা এবং এলাকার সাধারণ মানুষদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন বিএনপি মনোনয়ন প্রত্যাশী ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা।
শনিবার (৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার তারুয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ওলামা দল আশুগঞ্জ উপজেলা শাখার সংবর্ধনা ও পরিচিতি সভায় তিনি প্রধান অতিথি ছিলেন।
রুমিন ফারহানা গণমাধ্যম কে বলেন, আমি আমার নেতাকর্মী ও এলাকার সাধারণ মানুষের সঙ্গে ছিলাম, আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকব। আজ আমি যে পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছি তার পেছনে আমার নেতাকর্মীদের অক্লান্ত পরিশ্রম আছে। তাদের শ্রম রয়েছে, তাদের অর্থ ব্যয়তাদের অর্থ ব্যয় রয়েছে। আমার নেতাকর্মীরা আমাকে যে সিদ্ধান্ত দেবে, আমার ভোটাররা যে সিদ্ধান্ত দেবে, আমার সরাইল-আশুগঞ্জের জনগণ যে সিদ্ধান্ত দিবে, তার সঙ্গে আমি থাকব।
তিনি আরও বলেন, অনেক আসনে এখনো প্রার্থী ঘোষণা করেনি বিএনপি। বিএনপি অনেক বড় একটি রাজনৈতিক দল, দীর্ঘ ১৭ বছর সংগ্রাম করেছে ও ত্যাগ স্বীকার করেছে। বিএনপির সঙ্গে অন্য দলগুলোর জোট গঠনের কথা চলছে। জোটরা যে আসনগুলো চেয়েছে সেই আসনগুলো আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। খুব কম সময়ের মধ্যেই এ আসনগুলোতে প্রার্থী ঘোষণা করা হবে।জানা গেছে, বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে থেকেই মাঠে আছেন সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহ-সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। প্রায় প্রতি সপ্তাহে তিনি এলাকায় গণসংযোগসহ নানা সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে আসছেন। তার জনসভাগুলোতে হাজার হাজার লোকের জনসমাগম হচ্ছে, যেখানে উপস্থিত হচ্ছে গ্রামের সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে তরুণ প্রজন্মও। এছাড়া তিনি সব সময় নেতাকর্মীদের পাশে থেকে আর্থিক ও আইনি সহযোগিতা করে আসছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সদস্য আশুগঞ্জের বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী সাদেক মিয়া বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার ব্যাপক জনপ্রিয়তা আছে। এ আসনের ৭০ শতাংশ সাধারণ মানুষ ও দলীয় নেতাকর্মী রুমিন ফারহানার পক্ষে আছে এবং থাকবে। এখানে জোটের শরিক কাউকে মনোনয়ন দেওয়ার পর রুমিন ফারহানা স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে জোটের প্রার্থী জামানত হারাবেন।
১৯৭৩ সালে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-২ আসন (বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২) থেকে রুমিন ফারহানার বাবা ভাষাসংগ্রামী অলি আহাদ নির্বাচন করেছিলেন।
তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের তাহের উদ্দিন ঠাকুর। ‘বিতর্কিত’ ওই নির্বাচনে তাহের উদ্দিন ঠাকুরকে ঢাকা থেকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছিল বলে অভিযোগ আছে।
