চট্টগ্রামে এক বছর আগে হাসান তারেক নামে এক যুবকের হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ও সরাসরি জড়িত আলাউদ্দীন আলোকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। একটি মাদকের চালান ডিবির হাতে ধরিয়ে দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে আলাউদ্দীনের পরিকল্পনায় হাসান তারেককে হত্যা করা হয়।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান গোয়েন্দা পুলিশের (ডিসি-পশ্চিম) মাহবুব আলম খান। হাসান তারেক হত্যা মামলার আসামি গ্রেফতারের বিষয়ে জানাতে এই সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করে ডিবি।
গ্রেফতার আলাউদ্দীন নোয়াখালীর সুধারাম থানার তোফায়েল আহমেদের ছেলে। তার বিরুদ্ধে হত্যা, চুরি ও মাদক আইনে ১৮টি মামলা রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে মাহবুব আলম খান জানান, গত বছরের ১০ জানুয়ারি হাসান তারেক একটি মাদকের চালান পুলিশের হাতে ধরিয়ে দেন। চালানটির মালিক ছিলেন শওকত আকবর, আলাউদ্দীন আলো ও মোর্শেদ আলম প্রকাশ সোহেল। ওই মাদকের চালানসহ আলাউদ্দীন এবং মোর্শেদ গ্রেফতার হয়ে দীর্ঘদিন জেল খাটেন। পরে জামিনে বের হয়ে আসেন তারা। জামিনে বের হওয়ার পর তারা হাসান তারেককে হত্যার পরিকল্পনা করেন। আলাউদ্দীন, শওকত এবং মোর্শেদ জামালখান এলাকার একটি গলিতে বসে ওই হত্যার পরিকল্পনা করেন।
পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২৪ সালের ১১ অক্টোবর রাতে আলাউদ্দীন তার সহযোগী মোর্শেদ ও শওকত কাজির দেউড়ি এলাকায় ছিলেন। সাকিব এবং ইকবাল হোসেন বাবু নামে আরও দুইজন হাটহাজারী এলাকা থেকে একটি গ্রাম সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে কাজির দেউড়িতে এসে আলাউদ্দীন ও শওকতের সঙ্গে কথা বলেন। শওকত হত্যাকান্ডের খরচের জন্য ২০ হাজার টাকা আলাউদ্দীনের হাতে দেন।
সবাই অটোরিকশা নিয়ে গরীবউল্লাহ শাহ মাজারের এলাকার সেঁজুতি ট্রাভেলসের কাউন্টারে সামনে যান। শওকত অটোরিকশা থেকে নেমে সেখানে আগে থেকে অবস্থান করা হাসান তারেককে ওই গাড়িতে তুলে দেন। ওই অটোরিকশায় হাসান তারেক ছাড়াও আলাউদ্দীন মোর্শেদ, সাকিব ও ইকবালসহ চারজন ছিলেন। তারা বায়েজিদ লিঙ্ক রোডে পৌঁছলে হাসান তারেককে গাড়ির ভেতরেই রশি দিয়ে বেঁধে ফেলে। পরে তারেকের গলায় রশি পেঁচিয়ে দুই পাশ থেকে দুইজনে টান দেন। ২০ মিনিটের মধ্যে তারেকের মৃত্যু হয়।
মাহবুব আলম খাঁন জানান, তারেকের মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর আলাউদ্দীনসহ অন্য আসামিরা লাশ রাসমনি ঘাট সংলগ্ন এলাকায় ফেলে দেয়। পরে আসামিরা ওয়াসার মোড়ে কুটুম বাড়ি রেস্টুরেন্টে গিয়ে রাতের খাওয়া-দাওয়া করে। খাওয়া শেষে বাইরে এসে আলাউদ্দীন প্রকাশ, আলো শওকত থেকে পাওয়া ২০ হাজার টাকা থেকে মোর্শেদকে ৫ হাজার, সাকিবকে ২ হাজার, ইকবাল প্রকাশ বাবুকে ২ হাজার এবং অটোরিকশাচালককে ২ হাজার টাকা দেন। টাকা পেয়ে আসামিরা যার যার মতো করে বাসায় চলে যান। সাকিব ও ইকবাল অটোরিকশাযোগে হাটহাজারী চলে যান।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (গণসংযোগ) আমিনুর রশীদসহ ডিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
