আনোয়ার সাঈদ তিতু : নিজেদের গচ্ছিত অর্থ ফেরত পেতে কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলার রমনা ইউনিয়নের জোড়গাছ নতুন বাজার এলাকায় বেসরকারি দারিদ্র্যমুক্ত বহুমুখী সমবায় সমিতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন সহস্রাধিক ভুক্তভোগী পরিবার।
শনিবার (০৪ অক্টোবর) বেলা ১১ টার দিকে উপজেলার রমনা মডেল ইউনিয়নের জোড়গাছ নতুন বাজার এলাকায় এ বিক্ষোভ কর্মসূচি ও মানববন্ধন করেন ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকরা।
জানা গেছে, কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলার রমনা ইউনিয়নের জোড়গাছ নতুন বাজার এলাকায় দারিদ্র্যমুক্ত বহুমুখী সমবায় সমিতির নামে একটি সংগঠন ২০০৭ সালের জুন মাসে প্রতিষ্ঠিত হয়।
পরবর্তীতে ওই বছরেই চিলমারী উপজেলা সমবায় অফিস থেকে রেজিস্ট্রেশন পেয়েছেন সমিতিটি। সমিতির নাম করে একটি চক্র প্রায় ৩ হাজার সদস্য নিয়ে লোক দেখানো ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম শুরু করেন। সমিতিতে টাকা রাখলে উচ্চ হারে লভ্যাংশ প্রদানের লোভনীয় অফার গ্রাহকদের বাগে আনতে বেগ পেতে হয়নি। অল্পদিনের মধ্যেই বিভিন্ন মেয়াদে টাকা জমা নিয়ে ৩-৪ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় এবং সমিতির কার্যক্রম গোপনে বন্ধ করে গা ঢাকা দিয়ে আত্মগোপনে চলে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি।
এদিকে গ্রাহকরা খবর পেয়ে জমানো অর্থ ফেরত নিতে গেলে সদস্যদের অনেক দিন ধরে বিভিন্ন রকম টালবাহানা শুরু করে সমিতির কর্তৃপক্ষ। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে কষ্টার্জিত অর্থ ফেরত পেতে শনিবার সকালে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনে বিস্তারিত আলোচনায় উঠে আসে ।
এ সময় ওই সমিতির গ্রাহক ছকিনা বেগম (৬০) বলেন, আমি ভিক্ষা করে এবং মাটি কাটার কাজ করে গচ্ছিত সাড়ে ৬ লাখ টাকা সমিতিতে বেশি লাভের আশায় জমা করেছি। সেই টাকা ফেরত না পেয়ে আমি প্রায় পাগল হয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছি।
অন্যদিকে খড়খড়িয়া এলাকার রিপন মিয়ার ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা, থানাহাট ইউনিয়নের সবুজপাড়া এলাকার জয়ন্ত রায় জয়ন ১ লাখ ২২ হাজার টাকা, সরকারপাড়া এলাকার এরশাদুল হক ৮০ হাজার টাকা, জোড়গাছ সাত ঘড়িপাড়া এলাকার সুফিয়া দেওয়া ১ লাখ ২৮ হাজার টাকা, একই এলাকার জেলেখা বেওয়া ১ লাখ ৪৮ হাজার টাকা, কসভান বেওয়া ৬০ হাজার টাকা, মিম আক্তার ৩৬ হাজার ৫০০ টাকাসহ প্রায় ৩ হাজার গ্রাহকের নিকট থেকে ৩ থেকে ৪ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার কথা জানিয়েছেন গ্রাহকরা।
দারিদ্র্যমুক্ত বহুমুখী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক নুর আলম বলেন, সমিতির পরিচালক আনিসুর রহমান আনিস এবং মিল্টন অর্থ উত্তোলনকারী ১৭ জন কর্মচারীর কাগজপত্র তাদের জিম্মায় নেওয়ায় আমরা হিসাব দিতে পারছি না। তবে গত এক সপ্তাহ আগে সাড়ে ৩৩ শতাংশ জমি ৯৫ লাখ টাকা পরিশোধের জন্য সাতটি দলিল মূলে দেওয়া হয়েছে। বাকি গ্রাহকদের পরিশোধ করার মতো অর্থ সমিতিতে নেই।
দারিদ্র্যমুক্ত বহুমুখী সমবায় সমিতির পরিচালক (ঋণ) আনিসুর রহমান আনিসের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তাকে পাওয়া যায়নি।