মঙ্গলবার, ২৫শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল পরিষদের নেতা প্রকল্প পরিচালক হামিদুল হকের দুর্নীতি স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি 

স্টাফ রিপোর্টার
অক্টোবর ১৩, ২০২৫ ৮:০১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সাম্প্রতিক স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) দ্বিতীয় নগর অঞ্চল উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. হামিদুল হক এর দুর্নীতির অভিযোগ উঠলেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। দুর্নীতির মাধ্যমে অঢেল সম্পদের মালিক বনে গিয়ে এখনও রয়েছে বহাল তবিয়তে। তবে এলজিইডির সৎ যোগ্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ক্ষোভে ফুঁসছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি গণমাধ্যম কে বলেন, বিগত সরকারের আমলে দাপুটে আচরণ করে সব ধরনের ফায়দা লুটেছে তবে ভোল পাল্টে এখনও সুবিধা ভোগ করছেন। ক্ষোভের সঙ্গে আরো বলেন, এলজিইডির প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে আমরা দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ জমা দেবো। তাঁর ঘুষ,দুর্নীতি, অনিয়ম স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ গোটা এলজিইডি জুড়ে চাউর হয়েছে। সম্প্রতি এ অপকর্ম প্রতিরোধে গোয়েন্দা সংস্থায় তাঁর বিরুদ্ধে প্রকল্পের অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে একখানা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন মো. হেমায়েত উদ্দিন নামের এক ব্যাক্তি।

লিখিত অভিযোগপত্রে উল্লেখ করে বলেন, প্রকল্প পরিচালক হামিদুল হক দ্বিতীয় নগর অঞ্চল উন্নয়ন প্রকল্পে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে দরপত্র আহ্বান, ঠিকাদার নিয়োগ, স্বজনপ্রীতি ও পছন্দের লোকদের কাজ দিয়ে বেশি কমিশন আদায় ছিল তাঁর নিয়মিত কাজ। নিজস্ব বলয়ে ঠিকাদার সিন্ডিকেট তৈরি করে কাজ দিয়ে কমিশন নিয়ে নিতেন এবং এখনও স্বৈরাচারী প্রবণতা অব্যাহত রেখেছেন।

অভিযোগকারী আরও উল্লেখ করেন,দ্বিতীয় নগর অঞ্চল উন্নয়ন প্রকল্পের (সিআরডিপি-২) কার্যক্রম আদ্যপান্ত সরজমিনে তদন্ত করলে মো: হামিদুল হকের অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতসহ আদ্যোপান্ত উঠে আসবে।তিনি বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের দোসর ও সুবিধাভোগী। এর বাইরে তিনি বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের একজন দাপুটে নেতা ছিলেন। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের থোরাই কেয়ার করতেন।তিনি আওয়ামী রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থেকে ক্ষমতার অপব্যহার, অনিয়ম, দুর্নীতি করে অঢেল সম্পদের মালিক বনে গেছেন। যা তার জ্ঞাত আয়ের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ।হামিদুল হক ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের জাতীয় পরিচয়পত্রের বিপরীতে সম্পদের অনুসন্ধান করার জন্যেও অনুরোধ করেন অভিযোগপত্রে।

এদিকে সম্পদের অনুসন্ধানে জানা গেছে,এলজিইডি’র সিআরডিপি-২ এর এই প্রকল্প পরিচালকের রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মোহাম্মদিয়া হাউজিং সোসাইটিতে (হামিদ ভিলা) একটি বহুতল বাড়ি রয়েছে। যার বাড়ি নম্বর-২১০/বি, রোড নং-৪। এছাড়া ঢাকার মোহাম্মদপুরে ১১/১৬, সলিমুল্লাহ রোডে তাঁর স্ত্রী আরমানা ইসলামের নামে রয়েছে আরো একটি বাড়ি।

ঢাকার শেখের টেকে ৩ নম্বর রোডে প্যারামাউন্ট হাউজিংয়ের ১০ নম্বর ভবনে রয়েছে একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট। এছাড়াও নামে-বেনামে রয়েছে একাধিক প্রাইভেট কার।তবে তাঁর এবং নিজ পরিবারের সদস্যদের নামে রয়েছে বিভিন্ন ব্যাংকে কোটি কোটি টাকার এফডিআর। গ্রামের বাড়িতে রয়েছে স্থাবর-অস্থাবর অঢেল সম্পদ।

বিগত আওয়ামী শাসনামলে দলীয় প্রভাব বিস্তার করে অনিয়ম, দুর্নীতির মাধ্যমে অঢেল সম্পদ গড়ে তুলেছেন তিনি। বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদ এলজিইডি শাখার ৩৬ নম্বর সদস্য থাকার কারণে সবসময় দাপুটে কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিতি অর্জন করেন। যে সৎ যোগ্য ব্যক্তিদের কোনঠাসা করে রাখতেন।আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী কর্মকর্তা হওয়ায় বঙ্গবন্ধু জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপন কমিটিতেও তিনি নিজের জায়গায় ভিত মজবুত করে নিয়েছিলেন। তবে ওই কমিটিতেও ৭ নম্বর সদস্য ছিলেন তিনি। আওয়ামী লীগের মন্ত্রী এমপিদের সাথে ঘনিষ্ঠতার সুবাদে বাগিয়ে নিয়েছেন প্রকল্প পরিচালকের গুরুত্বপূর্ণ পদ। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নিয়মিত অর্থদাতা হিসেবেও তাঁর বেশ নাম-ডাক রয়েছে গোটা এলজিইডি জুড়ে। এবং একারণেই আওয়ামী ছত্রছায়ায় সব চেয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে ছিলেন তিনি।

বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের এই নেতা রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পরও কৌশলে ব্যাপক দুর্নীতি করে আসছেন। দাপটের সাথে প্রকল্পের পিডির দায়িত্বও পালন করে যাচ্ছেন। ওই অভিযোগপত্রে সর্বশেষে দ্বিতীয় নগর অঞ্চল উন্নয়ন প্রকল্পের পিডি এবং বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের এই নেতার দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদের বিষয়ে গোয়েন্দা সংস্থাকে তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানানো হয়।

এসব অনিয়ম, অবৈধ সম্পদ ও অভিযোগপত্রের উল্লেখিত বিষয়ে জানতে প্রকল্প পরিচালক হামিদুল কাছে জানতে চাইলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। তাঁর অভিযোগ তদন্তে কোন তদন্ত কমিটি হয়েছে কিনা কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে দৈনিক স্বাধীন কাগজ তাঁর সম্পদের অনুসন্ধ অব্যহত রেখেছে। তাঁর সম্পদের বিস্তারিত থাকছে পরবর্তী সংখ্যায়।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।