মঙ্গলবার, ২৫শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

জবির পোগোজে এইচ এসসির ৭৩ শতাংশ শিক্ষার্থীই ফেল

শিক্ষাবিষয়ক রিপোর্টার
অক্টোবর ১৬, ২০২৫ ৬:৪৪ অপরাহ্ণ
Link Copied!

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আওতাধীন ঐতিহ্যবাহী পোগোজ ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজে এইচএসসির ফলাফল বিপর্যয় হয়েছে। মোট পরীক্ষার্থীর ৭২ দশমিক ৭৩ শতাংশ শিক্ষার্থীই ফেল করেছে।

এতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। তারা এর জন্য প্রতিষ্ঠানটি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের যথাযথ পরিকল্পনা ও তদারকির অভাবকে দুষছেন।

অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দিন দিন ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির মানের অবনতি হচ্ছে। লেখাপড়ার পর্যাপ্ত সুযোগ ও পরিবেশ নেই। বিগত সরকারের সময় নিয়মের তোয়াক্কা না করে অদক্ষ শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। সে কারণেই এ অবস্থা হয়েছে।

২০২৫ সালের এইচএসসির ফলাফলে দেখা যায়, মোট ৬৬ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ১৮ জন উত্তীর্ণ হয়েছে; যা মোট শিক্ষার্থীর ২৭ দশমিক ২৭ শতাংশ। মানে ৭০ শতাংশের অধিক শিক্ষার্থী ফেল করেছে। কেউ জিপিএ ৫ অর্জন করতে পারেনি। বাণিজ্যে পাশ করেছে ৪ জন এবং ফেল করেছে ২৪ জন। মানবিকে পাশ করেছে ৭ জন, ফেল করেছে ১৯ জন। বিজ্ঞানে পাশ করেছে ৭ জন, ফেল করেছে ৬ জন।

এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির বিগত ৩ বছরের ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এইচএসসিতে কোনো বছরই জিপিএ-৫ পায়নি কোনো শিক্ষার্থী। ২০২৪ সালে পাশের হার ছিল ৬৫ দশমিক ৩৩ শতাংশ। ২০২৩ সালে ছিল পাশের হার ৪৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ এবং ২০২২ সালে পাশের হার ছিল ৯০ দশমিক ৪৮ শতাংশ।

জানা যায়, আর্মেনীয় ব্যবসায়ী জেসি নিকোলাস পোগোজের হাত ধরে ১৮৪৮ সালে তৎকালীন পূর্ববঙ্গের প্রথম বেসরকারি বিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় স্কুলটি। এর মধ্যে পার হয়েছে ১৭৬ বছর। সর্বশেষ ২০১৫ সালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সঙ্গে একীভূত হয় ঐতিহ্যবাহী এই প্রতিষ্ঠানটি। তখন নতুন নামকরণ হয় ‘পোগোজ ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়’। জবির সঙ্গে একীভূত হওয়ার পর থেকে প্রতিষ্ঠানটির মানের অবনতি হতে থাকে বলে স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা জানান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক জানান, বিভিন্ন কারণে এবার এইচএসসি পরীক্ষার ফল খারাপ হয়েছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র আট জন ছাত্র। কম পাশের হার ও এত অল্প জিপিএ-৫ পাওয়ায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা গেছে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী শাহিন মিয়া বলেন, এসব প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য প্রয়োজনে আলাদা বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করতে হবে। সব সময় শিক্ষার মানের দিকে নজর দিতে হবে প্রশাসনকে।

পোগোজ ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সাত্তার বলেন, আমাদের মধ্যে অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। আমরা সব শিক্ষকরা বসে তা খতিয়ে দেখব। এই বছর সারা দেশেই ফল বিপর্যয় হয়েছে। আশা করি দ্রুত আমরা তা কাটিয়ে উঠতে পারব।

পোগোজ ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজে পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, এটি অত্যন্ত দুঃখজনক সংবাদ। ৭০ শতাংশের অধিক শিক্ষার্থী ফেল করার ঘটনা ঘটেছে। আমরা শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটকে (আইইআর) একটা প্রজেক্ট তৈরি করে দিতে বলেছি। প্রতিষ্ঠানটিকে আইইআরের আওতায় নিয়ে আসব। তখন আশাকরি সব সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। অতীতে এই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগসহ বিভিন্ন বিষয়ে অনেক ফল বিপর্যয় হয়েছে।যে কারণে আজকে এ ফল বিপর্যয়।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।