ফরিদপুরের নগরকান্দা, সালথা উপজেলা ও ভাঙ্গার আলগী-হামেরদি ইউনিয়ন গিয়ে গঠিত ফরিদপুর-২ আসন এবং ফরিদপুর সদর নিয়ে গঠিত ফরিদপুর-৩ আসন। এই দুই আসনে বিএনপির প্রয়াত দুই শীর্ষ নেতার উত্তরসূরি হিসাবে তাদের মেয়েদের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন-ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান, সাবেক মন্ত্রী চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফের কন্যা কেন্দ্রীয় মহিলা দলের যুগ্ম সম্পাদক চৌধুরী নায়াব ইউসুফ এবং ফরিদপুর-২ আসনে বিএনপির সাবেক মহাসচিব ও সাবেক উপমন্ত্রী প্রয়াত কেএম ওবায়দুর রহমানের কন্যা ও কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ইসলাম রিংকু। এ দুই আসনে দুই নারি নেত্রী বিএনপির মনোনয়ন পাওয়ার পর নির্বাচনি মাঠে নেমে পুরোদমে কাজ শুরু করেছেন। সকাল থেকে রাত অবধি নিজ নিজ এলাকার ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধানের শীষের পক্ষে জনসংযোগ করে প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ফরিদপুর সদর আসনের বিএনপির প্রার্থী চৌধুরী নায়াব ইউসুফ ঈশান গোপালপুর ও কৈজুরি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে উঠান বৈঠক ও ধানের শীষের পক্ষে প্রচারণা চালান। এ সময় তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে এখনো ষড়যন্ত্র চলছে, সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে ষড়যন্ত্র মোকবিলা করতে হবে। দীর্ঘ ১৭ বছর বিএনপির নেতাকর্মীরা অনেক অত্যাচার সহ্য করেছে। এখন আর কোনো অপশক্তিকে বরদাশত করা হবে না। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে সব সমস্যার মোকাবিলা করা হবে। জনসংযোগকালে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব গোলাম মোস্তফা মিরাজ, বেনজির আহমেদ তাবরিজসহ বিএনপি ও অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, ফরিদপুর-২ আসনের বিএনপির প্রার্থী শামা ওবায়েদ ইসলাম তার নিজ এলাকায় ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন। সকাল থেকে গভীর রাত অবধি তিনি জনসংযোগের পাশাপাশি নির্যাতিত মানুষের খোঁজখবর নিচ্ছেন। বৃহস্পতিবার সালথা উপজেলার ভবুকদিয়া গ্রামে এক কর্মিসভায় তিনি বলেন, বিগত দিনে কিছু মানুষ হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছে, আর অনেকে না খেয়ে থেকেছে। এটা তো বৈষম্য। এই বৈষম্যের জন্যই আমাদের ছোট ছোট ভাইবোনেরা মাঠে নেমেছিল। এই মাঠে নামতে গিয়ে বহু ছেলেমেয়ে জীবন দিয়েছে। তাদের রক্তের বিনিময় আজকে আমরা গণতন্ত্রের পথে হাঁটছি। নিজের বাবা বিএনপির সাবেক মহাসচিব মরহুম কেএম ওবায়দুর রহমানের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, অনেক রাজনীতিবিদ আছেন টাকা-পয়সা বাড়ি-গাড়ি বানিয়েছেন। অবৈধ উপায়েও অনেকে সম্পদ করেছেন। কিন্তু আমি গর্বিত, কারণ আমার বাবা ব্যাংকে দেনা রেখে মারা গেছেন। তিনি মারা যাওয়ার পর সবচেয়ে বড় সম্পদ আমার জন্য রেখে গেছেন, সেটা হলো সালথা-নগরকান্দার মানুষ। আমি দীর্ঘ ১৭টি বছর এই এলাকার মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। আগামীতে যদি সংসদে যেতে পারি তাহলে আরো অনেক বেশি কাজ করতে পারব।
এসময় সাবেক বিএনপি নেতা ফজলুল মতিন বাদশা, সালথা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান তালুকদার, নগরকান্দা উপজেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি হাবিবুর রহমান বাবুল তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান মুকুল, সালথা উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি শাহিন মাতুব্বর, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক খন্দকার খায়রুল বাসার আজাদ উপস্থিত ছিলেন।প্রসঙ্গত, ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনের একাধিকবার নির্বাচিত সংসদ-সদস্য ছিলেন বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ। এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন তার কন্যা চৌধুরী নায়াব ইউসুফ (নায়াব ইউসুফ আহমেদ)। তিনি কেন্দ্রীয় মহিলা দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আন্দোলন সংগ্রামে সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন চৌধুরী নায়াব ইউসুফ। তিনি ফরিদপুর জেলার পাশাপাশি অন্য জেলায় মহিলা দলসহ বিএনপিকে শক্তিশালী করতে নিরলসভাবে কাজ করেছেন।
ফরিদপুর-২ (নগরকান্দা, সালথা) আসনে তিন বারের সংসদ-সদস্য ও বিএনপির তৃতীয় মহাসচিব কেএম ওবায়দুর রহমান। তার মৃত্যুর পর মেয়ে বাবার রাজনীতির ময়দানে হাল ধরেন। তার নেতৃত্বে ফরিদপুর-২ আসনে বিএনপি সংগঠিত হয়েছে। সেই শামা ওবায়েদ ইসলাম এবার বাবার আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ নিয়ে লড়বেন।
