নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ রাজউক কর্মকর্তারা দুর্নীতিতে যেন ইদানীং সরব হয়ে উঠছে।এক জমিতে ডাবল নকশা ,এক নকশায় দুটি ভবন নির্মাণ, সত্তর লাখ টাকা নিয়ে জাল নকশা সরবরাহ করা সবই যেন বৈধতা পাওয়ার মতো ঘটনা।রাজউকে শতাধিক ঝুঁকিপূর্ণ অভিযোগ থাকলেও দায়সারা বক্তব্য দিয়ে অপরাধ আড়াল করতে চেয়েছেন একটি অসাধু চক্র। রাজউক জোন-৫/২ এর সীমানায় রয়েছে তেজগাঁও রেললাইন শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ সরণী- শহীদ ক্যাপ্টেন মনসুর আলী সড়ক,কাকরাইল মোড়- কাকরাইল রোড- মাওলানা ভাসানী সড়ক,কদম ফোয়ারা, শিক্ষা ভবনের পশ্চিম সীমানা, শিক্ষা চত্বর- হাইকোর্ট স্ট্রিট- দোয়েল চত্বর ,কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ,টিএসসি মোড়, নীলক্ষেত সড়ক,নীলক্ষেত বুক মার্কেট দক্ষিন সীমানা, নিউ মার্কেট পিলখানা রোড, গনকটুলি রোড, হাজারীবাগ বাসস্টপ-ঝাউচর বাজার , কেরাণীগঞ্জ উপজেলা সীমানা,বুড়িগঙ্গা নদী আটি বাজার মোড়,আটি বাজার কলাতিয়া রোড, চন্ডিপুর- ধলেশ্বরী নদী,রাজউক সীমানা- সাব-জোন ৫/১ এর দক্ষিন সীমানা- তেজগাঁও ফার্মগেট রেলগেট- তেজগাঁও রেললাইন।
এই বৃহৎ এরিয়ায় অথরাইজড অফিসার মোঃ ইলিয়াস দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর সহযোগী হিসেবে রয়েছেন একাধিক ইমারত পরিদর্শক এবং অন্যান্য কর্মকর্তা। ওই কর্মকর্তারা কাজের ফাঁকফোকর কাজে লাগিয়ে নোটিশ বাণিজ্যের মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছেন কোটি কোটি টাকা। রাজউকের কোনো ইমারত পরিদর্শকের ব্যক্তিগত সহকারী না থাকলেও অথরাইজড অফিসার ইলিয়াস তার ছোট ভাইকে ইমারত পরিদর্শক মনিরুজ্জামানের ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে নিয়োগ দিয়ে রেখেছেন। এটা তাঁর মিশন বাস্তবায়নের নতুন কৌশল।
এদিকে রাজধানীর ফার্মগেট তেজতুরি বাজার এলাকায় দুইটি অবৈধ ভবনের বিষয়ে গত মে মাসে দুইটি অভিযোগ জমা পড়লেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি অথরাইজড অফিসার মোঃ ইলিয়াস। সূত্রের বরাতে একাধিক গণমাধ্যম কর্মী তথ্য পেয়ে ইলিয়াস এর সাথে কথা বলতে গেলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। অভিযোগের বিষয় পরিচালক মোঃ হামিদুল ইসলাম এর কাছে জানতে চাইলে তিনি গণমাধ্যম কে বলেন, আপনারা নিশ্চিত থাকেন অথরাইজড অফিসার দ্রুত ব্যবস্থা নিবেন।অগাস্টের প্রথম দিকে পরিচালক এবং অথরাইজড অফিসারকে অভিযুক্ত অবৈধ নির্মাণাধীন ভবনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছেনা কেন ? এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন,ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং নজরে আসলে সেগুলো নেওয়া হবে। অনুসন্ধান বলছে,অথরাইজড অফিসার ইলিয়াসের সাথে অভিযুক্ত দুই ভবন থেকে মোটা অংকের ঘুষের লেনদেন হয়েছে। এঘটনাটি পরিচালকের দৃশ্যমান হলে ঘুষবাণিজ্যে ধামাচাপা দিতে তড়িঘড়ি করে ০৮ অগাস্ট অভিযুক্ত দুই ভবনের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করতে লোক দেখানো ডিপিডিসিতে একটি চিঠি প্রেরণ করেন।
এদিকে গত ১২ অগাস্ট ওই ভবনের কি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে জানতে চাইলে অথরাইজড অফিসার ইলিয়াস গণমাধ্যম কে বলেন , বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করতে ডিপিডিসি তে চিঠি দেয়া হয়েছে আপনারা ডিপিডিসির সঙ্গে কথা বলতে পারেন।
তথ্য বলছে, এ দুটি ভবন ছাড়াও অথরাইজড অফিসার ইলিয়াস এর বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক অভিযোগ। এর মধ্যে পূর্ব রাজাবাজার এলাকায় হোল্ডিং নং ১৩১/১ এই বাড়িতে এক সপ্তাহের সময় বেধে দিয়ে নোটিশ করেছিলেন ০৮ জানুয়ারি কিন্তু সময় পেরিয়ে গেলেও সাত দিন কখন শেষ হবে কেউই বোধগম্য নয়। তবে অথরাইজড অফিসার ইলিয়াস কি ব্যবস্থা নেবেন এমন প্রশ্নে হতাশা কাটছে না। অনুসন্ধান বলছে , ইলিয়াস মোটা অংকের লেনদেনের কারণে নোটিশগুলো ফাইলে আটকে পড়েছে।
ধানমন্ডির কলাবাগানে এক বাড়িতে ০৬ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে এক সপ্তাহের সময় বেধে দিয়ে নোটিশ করেছিলেন অথরাইজড অফিসার মোঃ ইলিয়াস। জানাগেছে ১২ লাক্ষ টাকার বিনিময়ে সেই নোটিশটিই গায়েব করে দিয়েছেন এই কর্মকর্তা যার কিছু তথ্য-উপাত্ত রয়েছে প্রতিবেদকের হাতে।
নকশার বাইরে ২০ ফিট থাকায় নিউ এ্যালিফ্যান্ট রোডের ল্যাবরেটরী রোডে হোল্ডিং নং ১১০,১১১,১১২ এবং একই দিনে হোল্ডিং নং ৮২ যা আবাসিক ভবনের অনুমতি থাকলেও বাণিজ্যিক ভবন হিসেবে ব্যবহারের কারণে ২০ অক্টোবর ২০২৪ তারিখে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাম্মাদ মনির হোসেন হাওলাদারের নেতৃত্বে ভবনের মিটার সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও ভবন আংশিক উচ্ছেদ করে সকল প্রকার নির্মাণ কাজ ও ভবন ব্যবহার বন্ধের নির্দেশ প্রদান করা হয়। কিন্তু তথ্য সূত্রে জানা গেছে, দুই ভবন থেকে মোঃ ইলিয়াসের সাথে ৩৫ লাখ টাকার বিনিময়ে সকল নির্দেশ অমান্য করে নির্মাণ কাজ ও ভবন ব্যবহার চালিয়ে যাচ্ছে ভবন মালিকেরা।এসব অনিয়মের বিষয় জানতে চাইলে জোন-৫ এর অথরাইজ অফিসার ইলিয়াস কোন সদোত্তর না দিয়ে কাজের ব্যস্ততা দেখান। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আপনারা শুধু আমাদের দোষ দেখেন কিন্তু আমাদের ইমারত পরিদর্শকরা কিভাবে সাইট ভিজিটে যায়, কত কষ্ট করে তা দেখেন না।দায়সারা বক্তব্য দিয়ে অপরাধ আড়াল করার চেষ্টা করছেন। অথরাইজড অফিসার ইলিয়াস এর অপকর্মের বিষয় জানতে চাওয়া হলে,জোন-৫ এর পরিচালক হামিদুল ইসলাম গণমাধ্যম কে বলেন, আপনাদের কাছে অভিযোগ থাকলে আপনারা প্রতিবেদন প্রকাশ করেন।
