মঙ্গলবার, ২৫শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

নিজস্ব প্রতিবেদক
নভেম্বর ১৫, ২০২৫ ১২:০৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ও সাউথইস্ট ব্যাংকের চেয়ারম্যান এম এ কাসেমের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অন্তনেই। তার দুর্নীতি ও অনিয়ম অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এম এ কাসেমের দুর্নীতি ও অনিয়মের বিষয়টি অনুসন্ধানে তিন সদস্যের অনুসন্ধান টিম গঠন করেছে দুদক। অনুসন্ধান টিমের সদস্যরা হলেন- উপপরিচালক আজিজুল হক, সহকারী পরিচালক মো. মেহেদী মুসা জেবিন, ও সহকারী পরিচালক আল-আমিন। এ বছরের ২ জুন তারিখে তার বিষয়ে অনুসন্ধানের চিঠি ইস্যু করেছেন দুদক।

এম এ কাশেমের বিষয়ে গঠিত অনুসন্ধান টিমের প্রধান ও দুদকের উপপরিচালক আজিজুল হকের কাছে অনুসন্ধানের অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি গণমাধ্যম’ কে বলেন, উনার (এম এ কাসেম) বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান চলমান রয়েছে। আমরা খুব শিগগিরই রিপোর্ট দিয়ে দেবো। রিপোর্ট রেডি হলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকবো। এবং খুব দ্রুতই তাকে দুদকে ডাকা হবে।

আজিজুল হক আরও বলেন, উনার (এম এ কাসেম) বিরুদ্ধে দুদকে দুইটি অভিযোগ জমা পড়েছে। একটি গাড়ি ক্রয় এবং অন্যটি জমি সংক্রান্ত্র। পাশাপাশি অর্থ কেলেঙ্কারির অভিযোগও আনা হয়েছে। আমরা এসব অভিযোগ খতিয়ে দেখছি।

এদিকে সাউথইস্ট ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান এম এ কাসেমের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের বিষয়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা চেয়ে দুদকে আরেকটি অভিযোগ জমা পড়েছে। ৩ সেপ্টেম্বর নিজামুল আলম নামের একজন ভুক্তভোগী দুদকে এ অভিযোগ দেন। তাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য জমি কেনাকাটায় ৩০৪ কোটি হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া অবৈধভাবে বোর্ড সদস্যদের জন্য দামি গাড়ি কেনা ও সিটিং অ্যালাউন্স বাবদ অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি সাউথইস্ট ব্যাংকের অর্থ কেলেঙ্কারির অভিযোগও আনা হয়েছে। এসব অভিযোগ তদন্ত করে তার বিচার দাবি করেছেন অভিযোগকারী। দুদকে জমা দেওয়া অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, সাউথইস্ট ব্যাংকের চেয়ারম্যান এম এ কাসেম ক্যাম্পাসের উন্নয়নের নামে ৯০৯৬ দশমিক ৮৮ ডেসিমাল জমির ক্রয়মূল্য বাবদ ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ ১৩ হাজার ৪৯৭ টাকা অতিরিক্ত অর্থ হস্তান্তর, রূপান্তর, স্থানান্তর ও গোপন করার মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছেন। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে।

এ অভিযোগে বলা হয়, কাসেম কম মূল্যের জমি বেশি দামে ক্রয়, ডেভেলপার কোম্পানি থেকে কমিশন নেওয়া, ছাত্রদের টিউশন ফি থেকে অবৈধভাবে ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যের জন্য বিলাসবহুল গাড়ি ক্রয়, লাখ টাকা করে সিটিং অ্যালাউন্স, অনলাইনে মিটিং করেও সমপরিমাণ অ্যালাউন্স গ্রহণ, নিয়ম ভেঙে বিশ্ববিদ্যালয় ফান্ডের ৪০৮ কোটি টাকা নিজেদের মালিকানাধীন ব্যাংকে এফডিআর, ইউজিসির নির্দেশনা অমান্য করে কয়েকগুণ শিক্ষার্থী ভর্তিসহ নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা অনিয়মের বিষয়ে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে তার বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগ জমা পড়লেও অজ্ঞাত কারণে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

অভিযোগের তথ্যমতে, তিনি সিন্ডিকেট গড়ে তুলে পূর্বাচল সংলগ্ন নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ২৫০ বিঘা নিচু জমি কিনে প্রায় ৪২০ কোটি টাকা লোপাট করেছেন। তারা ২০১৪ সালে আশালয় হাউজিং অ্যান্ড ডেভলপার্স লিমিটেডের কাছ থেকে ৮০ কোটি টাকার জমি ৫০০ কোটি দিয়ে কিনে সেই টাকাও আত্মসাৎ করেন। এরপর নিচু জমি ভরাটের নামে ২০-২৫ কোটি টাকা লোপাট করা হয়। এতে আরও বলা হয়, শিক্ষার্থীদের টিউশন ফির অর্থ থেকে অবৈধভাবে ট্রাস্টি বোর্ডের ৯ জন সদস্যের জন্য ২৫ কোটি ৯৮ লাখ টাকা ব্যয়ে বিলাসবহুল আটটি রেঞ্জ রোভার ও একটি মার্সিডিজ বেঞ্জ গাড়ি কেনা হয়। এ গাড়ির চালকদের বেতন, রক্ষণাবেক্ষণ এবং তেলের খরচও বিশ্ববিদ্যালয়ের ফান্ড থেকে বহন করা হয়।

তবে তিনি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন অমান্য করে আটটি কমিটির বিপরীতে ২৫টি কমিটি গঠন করে অতিরিক্ত সিটিং অ্যালাউন্স আদায় করেন। এসব কমিটির মাধ্যমে তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সব ক্ষমতা নিজেদের হাতে কুক্ষিগত করে ইচ্ছে মতো ফায়দা হাসিল করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক সম্পত্তির ওপর নিজেদের নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট অর্থের (২০২১ সালের ৩১ আগস্টের হিসাব অনুযায়ী) ৪৩ শতাংশেরও বেশি (৪০৮ কোটি ৪০ লাখ) টাকা নিজেদের মালিকানাধীন সাউথইস্ট ব্যাংকে জমা রেখেছেন ব্যাংকটির চেয়ারম্যান কাসেম।

এদিকে কাসেমের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো দ্রুত তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন অভিযোগকারীরা।এতে আরও বলা হয়, অর্থ ও সম্পত্তি আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলার আসামি। স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০২২ সালে অদৃশ্য ইশারায় আদালতকে প্রভাবিত করে নিজের পক্ষে রায় নেন। রাষ্ট্রের স্বার্থে সাউথইস্ট ব্যাংক ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো দুটি প্রতিষ্ঠান রক্ষায় এম এ কাশেমের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি।

এসব অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে এম এ কাসেম বলেন, দুদক যদি কোনো তদন্ত করে, তাহলে আমাদের পক্ষ থেকে তাদেরকে সহযোগিতা করা হবে। আমি যা করেছি সবই নিয়মের ভেতরে আছে।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।